Wednesday 31 August 2016


মুফাসসিরে কোরান ও মুহাদ্দিসদের মাযহাব ও তাদের অভিমত 

....................................................... অালী অাহমদ চৌধুরী


অালী অাহমদ চৌধুরী
ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিমের উস্তাদ ইমাম ইবনে মঈন (রহঃ) এর মায্হাবঃ


ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিমের উস্তাদ, হাদীসের জগতে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বজন স্বীকৃত ইমাম বিশেষত হাদীস যাচাই-বাছাই বা ইল্মুল্ জারহ্ অ-তা’দীলের অতুলনীয় ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্যাসাগর ইয়াহ্ইয়া ইবনে মঈন (রহঃ) অসীম জ্ঞানের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও তিনি বল্গাহীন পথ পরিহার করে ইমাম আবু হানীফার তাক্বলীদ করে চলতেন।
এ সম্পর্কে তাঁর নিজের মত দেখুনঃ
“ আমার নিকট গ্রহণযোগ্য ক্বিরাআত হামযার ক্বিরাআত এবং গ্রহণযোগ্য ফিক্বহ ইমাম আবু হানিফার ফিক্বহ। সকল মানুষকেও আমি এর উপর ঐক্যবদ্ধ পেয়েছি। ”
( তারিখে বাগদাদঃ পৃ – ১৩/৩৪৭ )
ইমাম ইবনে মঈন (রহঃ) এর মায্হাব সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বর্ণনা করেনঃ
“ ইয়াহইয়া ইবনে মঈন জারহ অ-তা’দীলের ইমাম এবং শীর্ষস্থানীয় হানাফীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। ”
( মা’রিফাতুল্ মুতাকাল্লাম ফীহিম…যাহাবীঃ পৃ – ৭, ছাপা, মিশর ১৩২৪ হিঃ )
 
ইবনে মঈনের প্রশংসা করতে গিয়ে ইমাম আহমদ (রহঃ) বলেনঃ
“ ইমাম ইবনে মঈন যে হাদীস সম্পর্কে জানেন না সেটি হাদীস নয়। ”
( তাহযীবুত্ তাহযীব, ইবনে মঈনের জীবনী পর্বঃ পৃ – ১১/২৯ )
বস্তুত ইমাম ইবনে মঈন হাদীসের বর্ণনাকারীর সত্যায়ন ও হাদীসের যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সত্যিই অতুলনীয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রতীয়মান হয় যে, অবশ্যই যাচাই-বাছাই করতঃ হাদীসের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ ও বিশুদ্ধ মায্হাব হিসেবেই তিনি হানাফী মায্হাবকে মনোনীত করেছেন। অতএব, যারা বলে, হানাফী মায্হাব বিশুদ্ধ হাদীস পরিপন্থী, তাদেরকে ন্যায়পরায়ণতা ও আল্লাহর ভয় নিয়ে।
হাদীস সংকলকগণের মায্হাবঃ
১। ইমাম বুখারী (রহঃ) কে অনেকে মুজতাহিদ ইমামদের মধ্যে গণ্য করেছেন।
পক্ষান্তরে
ক) শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলভী (রহঃ) “ আল-ইনসাফ ”, পৃষ্ঠা : ৬৭
খ) আল্লামা তাজউদ্দীন সুবকী, “তবক্বাতুশ্ শাফেয়ীয়ার”, পৃষ্ঠা : ২/২
গ) গাইরে মুক্বাল্লিদ আলেম নবাব ছিদ্দিক্ব হাসান খান, “আবজাদুল উলুম”, পৃষ্ঠা : ৮১০
উনারা ইমাম বুখারী (রহঃ) কে শাফেয়ী মাযহাবের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করেছেন।
২। ইমাম মুসলিম শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন।
( গাইরে মুকাল্লিদ আলেম নবাব ছিদ্দিক্ব হাসান খান, “আল হিত্তার”, পৃষ্ঠা : ১৮৬ )
৩। আল্লামা আনওয়ার শাহ্ কাশ্মীরী (রহ) “ফয়জুল বারী”-এর ১/৫৮ পৃষ্ঠায় ইবনে তাইমিয়্যার উদ্বৃত্তি দিয়ে ইমাম নাসাঈ এবং আবু দাউদকে (রহঃ) হাম্বলী মাযহাব অবলম্বী বলেছেন।
অনুরূপভাবে গাইরে মুকাল্লিদ আলেম নবাব ছিদ্দিক্ব হাসান খান, “আবজাদুল উলুম”, পৃষ্ঠা : ৮১০ পৃষ্ঠায় উভয়কে হাম্বলী বলে উল্লেখ করেছেন।
ইবনুল ক্বায়্যিম (রহঃ) (মৃঃ ৭৫১ হিঃ) সুদৃঢ়ভাবে ইমাম আবু দাউদকে হাম্বলী বলেছেন।
( ই’লামুল মুয়াক্কিয়ীনঃ পৃঃ ১/২৩৬ )
৪। ইমাম তিরমিযী সম্বন্ধে শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দেহে দেহলভী “আল-ইনসাফের” ৭৯ পৃষ্ঠায় মুজতাহিদ তবে হাম্বলী মাযহাবের প্রতি আকৃষ্ট এবং এক পর্যায়ে হানাফী বলেও উল্লেখ করেছেন।
৫। ইমাম ইবনে মাজাহ্কে আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী “ফয়জুল বারী”-এর ১/৫৮ পৃষ্ঠায় শাফেয়ী বলে উল্লেখ করেছেন।
৬। ইমাম ত্বাহাবী (রহঃ) (মৃঃ ৩২১ হিঃ) তো হানাফী মায্হাবের ‘ ব্যারিস্টার ’ হিসেবেই প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন।
৭। ইমাম ইসহাক বিন রাহ্ওয়াইকে ইমাম সুবকী (রহঃ) হাম্বলী আর ইমাম কাশ্মীরী (রহঃ) হানাফী বলেছেন।
( তাব্কাতঃ পৃঃ ১/২৩২; ফয়যুল বারীঃ পৃঃ ৫৮

বিন বাজ ও অন্য সালাফী আলেমদের স্বাক্ষরিত একটি রেজুলেশনের একটি অংশ উল্লেখ করছি- “…………যে শ্রেনীর লোকেরা মানুষকে মাযহাব বর্জন করারআহবান করে এবং ফিকহের মাযহাব ও তার ইমাম গনের সমালোচনা করে এবং মানুষকে নতুন ইজতিহাদের মধ্যে নিয়ে আসতে চায় তাদের কর্তব্য, এই নিকৃষ্ট পন্থা পরিহার করা। যাদ্বারা তারা মানুষকে গোমরাহ করছে এবং তাদের ঐক্যকে বিনষ্ট করছে। – মাজাল্লাতুল মাজলায়িল ফিকহী, রাবিতাতুল আলামিন ইসলামী, মক্কা মুকাররমা বর্ষঃ ১, সংখ্যাঃ ২, পৃষ্ঠাঃ ৫৯,২১৯

মাযহাব সম্পর্কিত বিখ্যাত যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দীসীনে কেরাম কত হিজরীর মানুষ তারা এবং তাদের উদ্ধৃতি কি?

***ইমাম নববী (রহঃ) (মৃঃ ৬৭৬ হিঃ) ‘রাওযাতুত তালেবীন’ নামক গ্রন্থে লিখেনঃ  

“উলামাগণ বলেন, ইজতিহাদে মুতলাক ইমাম চতুষ্টয় পর্যন্ত খতম হয়ে গেছে। তাই তাঁরা ইমাম চতুষ্টয়ের কোন একজনের ‘তাক্বলীদ’ মুসলিম উম্মাহর জন্য ওয়াজিব সাব্যস্ত করে দিয়েছেন।

***ইমামুল হারামাইন জুয়াইনী 

(মক্কা-মদীনা শরীফের ইমাম সাহেব – রহঃ, মৃঃ ৪৭৮ হিঃ) মায্হাব চতুষ্টয়ের তাক্বলীদ ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে ‘ইজমা’ উল্লেখ করেছেন। ” ( নুরুল হিদায়া হতে সংকলিত, পৃ – ১০; দেখুনঃ ফয়যুল কাদীরঃ পৃ – ১/২১০; শরহুল মুহায্যাব, নববীঃ পৃ – ১/৯১, আদাবুল মুস্তাফতী অধ্যায় )

*** ইবনে তাইমিয়াহ 

(মৃঃ ৭২৮ হিঃ) লিখেছেনঃ “ মুসলিম উম্মাহর ‘ইজমা’ উপেক্ষা করে মায্হাব চতুষ্টয়ের বিপরীতে কোন মায্হাব রচনা বা গ্রহণ বৈধ হবে না। ” ( ফাত্ওয়া-ইবনে তাইমিয়াহ পৃ –২/ ৪৪৬ )

***আল্লামা ইমাম ইবনে হাজার মক্কী (রহঃ) 

(মৃঃ ৯৭৩ হিঃ) তাঁর স্বীয় প্রসিদ্ধ কিতাব ‘ফাতহুল মুবীন’ এ লিখেনঃ “ আমাদের যুগের বিশেষজ্ঞদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আবু হানীফা, শাফেয়ী, মালেক ও আহমদ বিন হাম্বল (রহ) – এচার ইমাম ব্যতীত অন্য কারও তাক্বলীদ (অনুসরণ) জায়িয নয়। ”( ফাতহুল মুবীনঃ পৃ – ১৯৬ )

***মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহ্হাব নজদী এর মায্হাবঃ লা-মায্হাবীরা দাবী করে থাকে যে,মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল ওহহাব নজদীও লা-মায্হাবী ছিলেন। কিন্তু তিনি একজন হাম্বলী মায্হাবের অনুসারী ছিলেন এবং তিনি নিজেই স্বীয় মায্হাব সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন। -দেখুনঃ আল-হাদিয়াতুস্ সুন্নাহঃ পৃ – ৯৯ । সাথে সাথে চার মায্হাবের যে কোন একটির তাক্বলীদ করা যাবে এবং এই চার মায্হাব ছাড়া অন্য কোন মায্হাবের অনুসরণ করা যাবে না বলেও তিনি মত প্রকাশ করেছেন। -তারীখু নাজদ-আলূসীঃ পৃ – ৫৪-৫৬;ছিয়ানাতুল্ ইনসানঃ পৃ – ৪৭১১

***শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ দেহলভী (রহঃ) এর মত :

শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ দেহলভী (রহঃ)(মৃঃ ১১৭৬ হিঃ), লা-মায্হাবীদের কাছেও যিনি গ্রহণযোগ্য, তাঁর সুপ্রসিদ্ধ কিতাব হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগায় লিখেনঃ “ সু-বিন্যস্ত গ্রন্থবদ্ধ এ চার মায্হাবের উপর সকল ইমামগণের ‘ইজমা’ তথা ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ” (হুজ্জাতুল্লাহি ল বালেগাঃ পৃ – ১/ ১২৩ )

***হযরত আল্লামা ইবনে হাজার মক্কী (রহ.) এর মত:

আল’আরবাঈন নামক কিতাবের ব্যাখ্যা গ্রন্থ “ফতহুল’মুবীন” এর মধ্যে বলেন,
وأمافى زماننا فقال أئمتنا: لايجوزتقليد غيرالأئمة الأربعة; الشافعى ومالك وأبى حنيفة وأحمد بن حنبل : رحمهم الله تعالى *
অর্থঃ আমাদের ইমামগণ বলেছেন, চার ইমাম (১) ইমাম শাফেয়ী (রহ.) (২) ইমাম মালেক (রহ.) (৩) ইমাম আবু হানীফা (রহ.) (৪) ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) ছাড়া অন্য কোন ইমামের অনুসরণ করা জায়েয নেই

***হযরত মোল্লা’জিওন সাহেব (রহ.) এর মতে:

হযরত মোল্লা’জিওন সাহেব (রহ.) তাফসীরে আহমাদিয়ায় লিখেছেন যে, তাফসীরে আহমাদিয়ায় লিখেছেন যে,
والإنصاف أن إنحصارالمذاهب فى الأربع فضل إلهى وقبولية من عندالله تعالى لامجال فيها للتوجيهات والأدلة ؛
অর্থঃ ইনসাফ হল, মাযহাব চারের মধ্যে সামীবদ্ধ হওয়া আল্লাহ পাকের দয়া ও তা কবুল হওয়ার দলীল এক্ষেত্রে দলীল ও ব্যাখ্যা দেয়ার সুযোগ নেই।

***বিখ্যাত উসূলে হাদীস বিশারদ, ইবনি নুজাইম (রহঃ) এর মত :

বিখ্যাত উসূলে হাদীস বিশারদ, ইবনি নুজাইম (রহঃ) (মৃঃ ৯৭০ হিঃ) লিখেন -
“ যে ব্যক্তি ইমাম চতুষ্টয়ের বিপরীত মতামত পোষণ করবে সে মুসলিম উম্মাহর ‘ইজমা’ তথা সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত-বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত হবে। ”
( আল্-আশ্বাহ্ ওয়ান নাযাইরঃ পৃ – ১৩১ )

***আল্লামা শা’রানী (রহঃ) এর মত :

আল্লামা শা’রানী (রহঃ) (মৃঃ ৯৭৩ হিঃ) তাঁর বিখ্যাত কিতাব আল্-মিযানে লিখেনঃ
“ নিজে পথভ্রষ্ট না হওয়া ও অপরকে পথভ্রষ্ট না করার জন্য নির্দিষ্ট মায্হাবের অনুসরণ জরুরী। ”
( ইনতেছারুল হক্ব হতে সংকলিতঃ পৃ – ১৫৩ )

***ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিমের উস্তাদের তাকলিদ :

হাদীসের জগতে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বজন স্বীকৃত ইমাম বিশেষত হাদীস যাচাই-বাছাই বা ইল্মুল্ জারহ্ অ-তা’দীলের অতুলনীয় ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্যাসাগর ইয়াহ্ইয়া ইবনে মঈন (রহঃ) অসীম জ্ঞানের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও তিনি বল্গাহীন পথ পরিহার করে ইমাম আবু হানীফার তাক্বলীদ করে চলতেন। “ আমার নিকট গ্রহণযোগ্য ক্বিরাআত হামযার ক্বিরাআত এবং গ্রহণযোগ্য ফিক্বহ ইমাম আবু হানিফার ফিক্বহ। সকল মানুষকেও আমি এর উপর ঐক্যবদ্ধ পেয়েছি। ” ( তারিখে বাগদাদঃ পৃ – ১৩/৩৪৭ )
কিন্তু ৪ মাযহাবের বিপক্ষে উম্মতের কোন পূর্ববর্তী গ্রহনযোগ্য আলেমের অবস্থান আমি অধমের চোখে পড়েনি

*** ইমাম বুখারী রহ. শাফেয়ী মাঝহাবে অনুসারী :

ইমাম বুখারী রহ. শাফেয়ী মাঝহাবে অনুসারী ছিলেন। (শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলভী রহ., “আল-ইনসাফ”, পৃষ্ঠা : ৬৭
আল্লামা তাজউদ্দীন সুবকী, “তবক্বাতুশ শাফেয়ীয়ার”, পৃষ্ঠা : ২/২
গাইরে মুকাল্লিদ আলেম নবাব ছিদ্দিক্ব হাসান খান, “আবজাদুল উলুম”, পৃষ্ঠা : ৮১০)

*** ইমাম মুসলিম শাফেয়ী মাঝহাবের অনুসারী :

ইমাম মুসলিম শাফেয়ী মাঝহাবের অনুসারী ছিলেন।(গাইরে মুকাল্লিদ আলেম নবাব ছিদ্দিক্ব হাসান খান, “আল হিত্তার”, পৃষ্ঠা : ১৮৬)

***ইমাম তিরমিযী :

ইমাম তিরমিযী সম্বন্ধে শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দেহে দেহলভী “আল-ইনসাফের” ৭৯ পৃষ্ঠায় মুজতাহিদ তবে হাম্বলী মাযহাবের প্রতি আকৃষ্ট এবং এক পর্যায়ে হানাফী বলেও উল্লেখ করেছেন।

***ইমাম নাসাঈ :

এবং ইমাম আবু দাউদ রহ. হাম্বলী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন।
(আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী রহ. “ফয়জুল বারী”-এর ১/৫৮ পৃষ্ঠায় ইবনে তাইমিয়্যার উদ্বৃত্তি দিয়ে উল্লেখ করেছেন।
গাইরে মুকাল্লিদ আলেম নবাব ছিদ্দিক্ব হাসান খান, “আবজাদুল উলুম”, পৃষ্ঠা : ৮১০)

***ইমাম ইবনে মাজাহ :

 ইমাম ইবনে মাজাহকে আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী “ফয়জুল বারী”-এর ১/৫৮ পৃষ্ঠায় শাফেয়ী বলে উল্লেখ করেছেন।

Sunday 28 August 2016

কবিতা ( গর্জে ওঠো)


M‡R© I‡Vv
Avjx Avng` †PŠayix


meyR k¨vgj †`‡k Avgvi

Kviv †e‡a‡Q evmv,

KZB †h fvB ¯^cœ wQj

wQjB KZ Avkv|



hy× K‡iwQ i³ w`‡qwQ

¯^vaxb K‡iwQ †`k,

Rw½ev‡`i _vevq AvwR

‡`kwU †gv‡`i †kl|



bvix al©Y Ki‡Q Zviv

Ki‡Q nZ¨v wkï,

Zv‡`i Kv‡Q wRw¤§ †gviv

gv_v K‡iwQ wbPz|



gvbeZv AvR fzjwÉZ

eÜ mevi gyL,

‡MvUv K‡qK mš¿vmxiv

iæL‡Q †gv‡`i myL|



Kei †`‡e †Zvgiv I‡`i

Ki‡e I‡`i bvk,

kÎæ Iiv †`k I RvwZi

Iiv †`‡ki Îvm|



M‡R© I‡Vv Avevi †Zviv

MvdjvwZ wb` †Q‡o

ûsKv‡i me cvwj‡q hv‡e

‡Zv‡`i cÖjq S‡o|


(Avjx Avng` †PŠayix)
Gg.wm K‡jR, wm‡jU|

Saturday 27 August 2016

কবিতা


ভুমিকম্প

gvndzRyi ingvb †bvgvb

wKqvg‡Zi AvjvgZ bvwK
fzwg w`‡e Nb SvwK
GUvB ivm~‡ji evYx
Z‡e wK wKqvgZ bq †ekx evwK|
hLb fzwg †K‡c D‡U
Avjøv Avjøv mevi †Vv‡U
f‡qi ‡XD mevi ey‡K
wK Rvwb wK N‡U|

Rwg hLb n‡q hvq kv›Z
‡Lv`vi fq nq KvšÍ
ZLb  Avevi cvcvPv‡i wjß
`ywbqvi Zvgvkvq †di gË|

fzwg cvi‡Q bv †g‡b wb‡Z
GZ bvdigvwb Zvi ey‡K‡Z
‡Lv`vi fq fz‡j,wVK c_ ‡Q‡o
nvU‡Q gvbyl wbZ¨ bZzb c‡_|

Thursday 4 August 2016

মানুষ হত্যা নয়: ইসলাম শান্তির ধর্ম

.............. মাওলানা মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ
মানুষ খুন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম ইসলাম ধর্মে এর স্থান নেই। ইসলাম শান্তির ধর্ম, সাম্যের ধর্ম। যারা মানুষ হত্যা করে, সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকে ইসলাম তাদেরকে ধিক্কার জানায়। শান্তি ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে জাতি ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সমাজের সকল মানুষের সহবস্থান জানমাল ও ইজ্জত আবরুর নিরাপত্তা নিয়ে বসবাস করুক এটা কোরআন-হাদীসের ঘোষণা। এ কথা দিবালোকের ন্যায় সত্য যে, ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি—, শৃঙ্খলা এবং মানুষের জান-মালের স্থায়ী নিরাপত্তার জন্যে কুরআন-হাদীসের আলোকে জীবনাদর্শের বাস্তবায়ন ও অনুকরণের বিকল্প নেই।
কোরআন-হাদীসের বাস্তব প্রতিচ্ছবি হচ্ছেন, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)। তাই মহানবীর (সাঃ) এর দেখানো মহান আদর্শ অনুস্বরণ করলে এ সমাজে খুন-সন্ত্রাসী চিনতাই কোন অবস্থায় সৃষ্টি হবেনা। কুরআন-হাদিস থেকে দূরে অবস্থান করার কারণে আজকের অশান্তিও পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।
এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে-
অনুবাদ: আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যতা করবে অবশ্যই তারা প্রকাশ্য ভ্রষ্টতায় পতিত হবে। (আল আহজাব, আয়াত ঃ ৩৬)
বর্তমান সময়ে ইসলামের নামে কতিপয় ইসলাম নামধারী মানুষ খুন-হত্যা,সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। যা কুরআন-হাদীসে এর কোন ভিত্তি নেই। মানুষ হত্যা, বোমাবাজী, গুপ্ত হত্যা করা ইসলামী রাষ্ট্র সমাজ প্রতিষ্ঠার পথ নয়। বরং ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অন্তরায়।
মানুষ খুন সম্পর্কেঃ
ইসলাম ধর্ম খুন-হত্যার মাধ্যমে তথা তরবারির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা লাভ করেনি। ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছে অনুপম আদর্শের মাধ্যমে। ইসলাম প্রতিষ্ঠার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা এর জলন্ত নমুনা দেখতে পাই।
মানুষ খুন করার পরিনাম সম্পর্কে কুরআনে ঘোষাণা হচ্ছে- অর্থাৎ- যে ব্যক্তি ইচ্ছে করে কোন মুমিনকে হত্যা করবে তার শাস্তি হল জাহান্নাম, সে সেখানে দীর্ঘকাল থাকতে বাধ্য হবে। তার প্রতি আল্লাহ তাআলা ভীষণ গজব আরোপ করবেন। তাকে রহমত থেকে বহু দূরে নিক্ষেপ করবেন এবং তিনি তার জন্যে কঠোর আজাব (শাস্তি) প্রস্তুত করে রেখেছেন। (আল নেছা, আয়াত ঃ ৯৩)
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম বুখারী (রাহঃ) রইছুল মুফাসিসরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর বক্তব্য তুলে ধরেণ।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, উক্ত আয়াতটি হত্যার অপরাধ সম্পর্কে নাযিলকৃত সর্বশেষ আয়াত। সুতরাং, এ আয়াতটির হুকুম সর্বদা বলবৎ থাকবে। যার সুষ্পষ্ট অর্থ হল, স্বেচ্ছায় কোন মুমিন হত্যাকারী ব্যক্তিকে অবশ্যই জাহান্নামী হতে হবে। এ বিষয়ে তার তাওবাও কবুল হবে না।
যুদ্ধে মানুষ খুন হয়, মারা যায়। এ সমস্ত কর্মকান্ড পরিহার করে শান্তি ও নিরাপদ পরিবেশ কামনা করার জন্য রাসূল (সাঃ) নির্দেশ দিয়েছেন এবং আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করার জন্য হুকুম করেছেন। এরশাদ হচ্ছে,অর্থাৎ- তোমরা শত্র“র সাথে যুদ্ধ কামনা করোনা বরং আল্লাহর নিকট নিরাপত্তা প্রার্থনা কর। (বুখারী, হাদীস নং- ৬৭৩০) অর্থাৎ- প্রকৃত মুসলিম সে লোক যার মুখের দুর্ব্যবহার ও হাতের অনিষ্ট থেকে অপরাপর মুসলিমরা নিরাপদ থাক।
সমাজে বসবাসরত অমুসলিমদের সাথে খুন-হত্যা পরিহার করে সুন্দর ও ন্যায় নিষ্ঠা আচরণে উৎসাহী করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, অর্থাৎ- আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে সে সকল (অমুসলিম) লোকদের সাথে সদ্ব্যব্যবহার ও ন্যায়-নিষ্ঠা আচরণ করতে নিষেধ করছেন না। যারা তোমাদের ধর্মীয় বিষয়াদিতে তোমাদের সাথে সংঘাত সৃষ্টি করেনা এবং তোমাদেরকে তোমাদের ঘর-বাড়ি ত্যাগ করতে বাধ্য করে না। আল্লাহ তাআলা ন্যায়-নিষ্ঠা আচরণকারীদের ভালবাসেন। (আল মুমতাহানাহ, আয়াত ঃ ০৮)
মুসলিম রাষ্ট্রে বা সমাজে বসবাসকারী বৈধ নাগরিককে বিনা বিচারে হত্যা করা ইসলামে কঠোরভবে নিষিদ্ধ। এ সম্পর্কে রাসূল (সাঃ) কঠোর সতর্ক করে বলেন, অর্থাৎ- যে ব্যক্তি নাগরিক অধিকারের চুক্তিতে চুক্তিবদ্ধ সম্প্রদায়ের কোন ব্যক্তিকে হত্যা করে সে জান্নাতের সুগন্ধও পাবেনা। অথচ জান্নাতের সুগন্ধ ৪০ দিনের সফরের দূরত্বে থেকেও পাওয়া যাবে। (বুখারী, ১ম খন্ড, হাদীস নং- ২৯২৮)
এ ব্যাপারে ইমাম আবু হানিফা (রাহঃ) এর মতে কোন চুক্তিবদ্ধ অমুসলিম বৈধ নাগরিককে খুন করার অপরাধে খুনীকে বিচারের মাধ্যমে হত্যা করা বৈধ।
রাসূল (সাঃ) আরো বলেন, অর্থাৎ- হুশিয়ার, সাবধান। যে ব্যক্তি নাগরিকের অধিকারের চুক্তিতে চুক্তিবদ্ধ সম্প্রদায়ের কোন ব্যক্তিদের প্রতি জুলুম করবে অথবা তার অধিকার খর্ব করবে কিংবা তার উপর তার অসাধ্য কোন দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে তাকে সীমাহীন কষ্টে ফেলে দিবে এবং তার অমতে তার কোন সম্পদ আত্মসাৎ করবে আমি (রাসূল) কিয়ামতের মহাবিচারের দিন তার বিরুদ্ধবাদী হয়ে দাঁড়াব। (আবু দাউদ শরীফ, খারাজ অধ্যায় )
কোন নিরপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করা জঘন্য অপরাধ। চাই সে মুসলিম হউক অথবা অমুসলিম হউক। এ ব্যাপারে কুরআনে কারীমে আদরা বলা হয়েছে-
অর্থাৎ- এমন কোন লোক যে কোন মানুষকে হত্যা করেনি কিংবা পৃথিবীতে ফেৎনা ফাসাদ সৃষ্টি করেনি তাকে যে ব্যক্তি হত্যা করল সে যেন গোটা মানব জাতিকে হত্যা করল। অর্থাৎ হত্যা করার কারণে বিপদজনক কাজের সূচনা করল।
কোন ব্যক্তির বা সমাজের সাথে মতের অমিল থাকতে পারে। ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হতে পারে। পারস্পারিক মনমালিন্য সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু তার কারণে মানুষকে হত্যা করা, ছিনতাই-গুম কোরআন-হাদীসের কোথাও বলা হয়নি। বরং শত্র“র সাথে ইনসাফ পূর্ন ব্যবহার দেখাতে বলা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কুরআন শরীফের বক্তব্য হল-অর্থাৎ- কোন জাতির প্রতি শত্র“তা যেন তোমাদেরকে তাদের প্রতি ন্যায়, নিষ্ট আচরণ না করার অপরাধে লিপ্ত না হয়। বরং (সকল অবস্থায়) ন্যায়, নিষ্ট আচরণের পথ অবলম্ভন করবে। আর এটাই হলো আল্লাহ তাআলার অসন্তুষ্টি ও আজাব থেকে আত্ম রক্ষার অধিকতর নিকটতম ব্যবস্থা। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে সব কিছুই জানেন। (আল মায়েদাহ, আয়াত ঃ ০৮)
খুন-হত্যা রাহাজানীর পথ পরিত্যাগ করে কুরআন-হাদীস মোতাবেক জীবন পরিচালিত করলে আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে সাহায্য আসবে। এ ব্যাপারে কুরআনে বলা হয়েছে-
অর্থাৎ- আর তোমরা আল্লাহ তাআলার আদেশ নিষেধের অনুগত্য কর এবং তাঁর রাসূলেরও। তাছাড়া তোমরা পরষ্পরে বিবাদ-সংঘাতে লিপ্ত হয়ো না। নতুবা তোমরা সাহসহীন হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব প্রতিপত্তি খুয়ে যাবে। আর তোমরা আল্লাহ তাআলার নির্দেশ পালনে অটল থাকবে। যারা দ্বীনের পথে অটল-অবিচল থাকে নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের সাহায্যকারী। (আল তাওবাহ, আয়াত ঃ ৪৬)।
হত্যার মত জগন্য কর্মকান্ডে লিপ্ত ব্যক্তিরাই জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে। মহানবী (সাঃ) বলেন,অর্থাৎ- দুই মুসলিম ব্যক্তি (অথবা দুইজন মুসলিম) যখন তাদের নিজ নিজ তরবারী তথা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পরষ্পরে যুদ্ধে লিপ্ত হবে তখন তাদের হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয় জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে। (মুসলিম শরীফ, ২য় খন্ড, ৬৫৯০)
মহানবী (সাঃ) খুন কিংবা হত্যা ও সন্ত্রাসী করে ইসলাম কায়েম করেন নাই। বরং তাঁর উত্তম আদর্শ আর ধর্য্যের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলাম ধর্ম।
মক্কা নগরীতে মানুষকে ইসলামের ছায়াতলে আনতে নিরস্ত্র দাওয়াতী কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন। এক্ষেত্রে তিনি বিরোধীদের চরম বিরোধীতার রোষানলে পড়েছিলেন। যার দরুণ মহানবী (সাঃ) কে নিজ মাতৃভূমি ত্যাগ করতে হয়েছিল। পরিহার করেছিলেন সশস্ত্র সংঘাত। অথচ রাতের গভীরে আকাবায়ে ছানীতে অনুষ্ঠিত সভায় প্রস্তাব উঠেছিল, মক্কার নেতৃস্থানীয় মুশরিকদের হত্যা করে দিলেই ইসলামের কাংখিত বিজয় অর্জিত হবে। কিন্তু মুক্তির দূত, শান্তির বার্তা বাহক মহানবী (সাঃ) মানুষের রক্ত ঝরাতে পছন্দ করেন না। তাই গভীর রাতের বৈঠকের প্রস্তাবে সম্মত হননি। বরং মাতৃভূমির মায়া ত্যাগ করে অশ্র“সিক্ত নয়নে মদিনায় হিজরতের সিদ্ধান্ত নেন। এতে প্রমাণিত হয় গুপ্তহত্যা কিংবা বোমাবাজী করে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কাজ নয়।
আওস ও খাজরাজ গোত্রের দীর্ঘদিনের চরম দন্দ্ব নিরসন করে মদিনার সনদ শান্তিচুক্তি করে বিশ্বের দরবারে চির স্মরণীয় হয়ে আছেন।
১৪/১৫ শত সাহাবী নিয়ে দূর্গম পথ পাড়ি দিয়ে ওমরাহ পালনে মহানবী (সাঃ) মক্কা শরীফ আসতে চাইলে পথিমধ্যে হুদায়বিয়া নামক স্থানে বাঁধার সম্মূখীন। অনেক সাহাবী প্রস্তুত নিলেন যুদ্ধ করে হলেও মক্কা শরীফ তওয়াফ করবেন। বিশেষ করে যারা মহাজির তারা বাড়ীর নিকটে এসে ফিরে যাবেন কোন অবস্থাতেই মেনে নিতে পাড়ছিলেন না। তাই যে কোনভাবে হউক মক্কা শরীফ ও নিজ মাতৃভূমি যিয়ারত করবো। নবীজী তাতে রাজি হলেন না। অন্যদিকে হযরত ওমর (রাঃ) যুদ্ধের অনুমতি না পেয়ে মাহনবী (সাঃ) কে প্রশ্ন করেন আমরা শহীদ হয়ে গেলে জান্নাতি হবো। তথাপি শত্র“দের বাঁধায় আমরা মক্কা যিয়ারত না করে কেন ফিরে যাব?
মহানবী (সাঃ) দেখলেন, সেদিন অনেক রক্তপাত হবে। তিনি রক্তপাত ঘটাতে পছন্দ করেন না। তাই তিনি সে দিন অসীম ধৈর্য্যরে পরিচয় দিলেন। সংঘাতের পথ পরিহার করে হুদায়বিয়ায় শান্তিচুক্তির মাধ্যমে শান্তির পথ বেছে নিলেন।
এই হল সামাজিক শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করে। মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সকল মানুষের সাথে সদ্ব্যবহার ও ইনসাফ পূর্ণ আচরণের পক্ষে ইসলামী জীবনাদর্শের বাস্তব নমুনা। যার ফলে প্রায় বিনা রক্তপাতে মক্কা বিজয় সূচীতে হয়েছিল।
জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস ঃ জঙ্গী ও জঙ্গীবাদ শব্দদ্বয় ইংরেজী গরষরঃধহ ধহফ গরষরঃধহপু শব্দদ্বয়ের বাংলা অনুবাদ। এ গুলি আমাদের মাঝে পরিচিত ছিল না। ইদানিং প্রকৃত জ্ঞান বিবর্জিত অতি উৎসাহী ইসলামী নামধারী ব্যক্তির ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার নামে বোমাবাজী ও উগ্রতা আমাদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠে।
অভিধানে এগুলো খারাপ অর্থে ব্যবহৃত হত না। শাব্দিক ও রূপকভাবে যোদ্ধা, সৈনিক বা যুদ্ধে ব্যবহৃত বস্তু বুঝাতে এ শব্দগুলি ব্যবহৃত হত। শ্রী শৈলেন্দ বিশ্বাস রচিত সংসদ বাংলা-ইংরেজী অভিধানের ৪৬২ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার কমান্ডার ইন চীফকে ‘জঙ্গিলাট’ বলা হতো।
বর্তমানে পত্র-পত্রিকার ভাষায় বুঝি যারা ইসলামের নামে বা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নামে কোন দল বা গোষ্ঠি উগ্রতা অস্ত্র ধারণ সহিংসতা বা খুন-খারাপি কাজে জড়িত তাদেরকে বলে জঙ্গি। আর যারা রাজনৈতিক দলের নামে বা মতবাদ নিয়ে ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠিগত স্বার্থ উদ্ধারের জন্য উগ্রতা, অস্ত্রধারণ, সহিংসতা বা খুন-খারাপিতে লিপ্ত হয় তাদেরকে সন্ত্রাসী বলে।
বর্তমানে সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদ নামে উগ্রতার পথ বেছে নিয়েছে কিছু প্রকৃত জ্ঞান বিবর্জিত ব্যক্তি এদেরকে পরিহার করা মুসলিম মিল্লাতের উচিত। ইসলামের নামে উগ্রহতা খুন-খারাপি, বোমাবাজী মহানবী (সাঃ) এর ৬৩ বৎসর জীন্দেগীতে হয়নি। সুতরাং তা পরিত্যাগ ইসলামের আসল উদ্দেশ্য ও জিহাদের মর্ম। না বুঝার কারণে এ সবের আবির্ভাব হয়েছে। আবেগের ভশীভূত হয়ে জিহাদের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ না বুঝে যারা এসব সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নস্যাৎ করতে চক্রান্তে পিপ্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে নিতে হবে যুগপোযোগী বাস্তব পদক্ষেপ। সঠিক ইসলামী জ্ঞান না থাকাই সরলপ্রাণ মুসলমান জঙ্গিবাদদের খপ্পরে পড়ে বা পড়ার মূল কারণ। তাই ইসলামী জ্ঞানর্জনে মুসলিম জাতিকে উৎসাহিত করা এবং তার বাস্তবায়ন করলেই এর প্রতিকার করা সম্ভব। শুধু মাদ্রাসায় নয় স্কুল, কলেজগুলোতে কোরআন-হাদীসের শিক্ষা প্রসার করলে মানুষ জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসীদের অপব্যাখ্যা আর প্রলোভনের স্বীকার হবে না। কোরআন-হাদীসের প্রকৃত জ্ঞান না জানার কারণে এসব হচ্ছে। তাই মাদরাসার পাশাপাশি স্কুল, কলেজে মহা গ্রন্থ আল কুরআন ও হাদীস শরীফ পাঠ্য তালিকা করা হউক। তবেই খুন, কারাপি, নিঁেখাজ-গুম থেকে জাতি রেহাই পাবে।